কম্পিউটার
আধুনিক বিশ্বে যে দেশ কম্পিউটার ও ইনফরমেশন টেকনোলজিতে যত উন্নত, সে দেশ ততই বেশি সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী। তথ্য প্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বকে গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত করেছে। আধুনিক এই যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমাদের জীবন যাপনের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট। এই পরিবর্তনশীল সময়ের সাথে এগিয়ে যাবার প্রত্যয় নিয়ে এসেছে কম্পিউটার প্রযুক্তি। প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বে নিজেকে আত্বনির্ভরশীল ব্যক্তি হিসাবে গড়ে তুলতে হলে কম্পিউটার টেকনোলজিতে পড়ার বিকল্প কিছুই হতে পারে না। একমাত্র কম্পিউটার টেকনোলজিই পারে বহুমুখি কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে কম্পিউটার প্রযুক্তিই অপরিহার্য।
ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং:
কম্পিউটার প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ারিং- এর সেই শাখা যা কম্পিউটারের সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যারের গবেষণা এবং বিকাশ নিয়ে কাজ করে। একে বলা যেতে পারে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সাইন্স এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সামষ্ঠিক জ্ঞান।
ইঞ্জিনিয়ারিং- এর এই শাখায় আলোচিত আর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে রয়েছে- মাইক্রোকন্ট্রোলার, মাইক্রোপ্রসেসর, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড টেস্টিং, সার্কিট ডিজাইন, হার্ডওয়্যার এবং নেটওয়ার্কিং।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং- এ ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং- এ ক্যারিয়ার বেছে নিতে পারে উর্পযুক্ত দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্ব:
একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার যেসব পদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন সেগুলো হল-
- সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
- প্রোগ্রামার
- ওয়েব ডিজাইনার
- সফটওয়্যার টেস্টার
- টেকনিক্যাল রাইটার
- ডাটাবেস ইঞ্জিনিয়ার
- হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
- নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ার
- ওয়েব ডেভেলপার
- প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার
- সিস্টেম অ্যানালিস্ট
- ক্লাউড আর্কিটেক্ট
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের কর্মক্ষেত্র-
বর্তমানে বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশনের কারনে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা সেরকম কিছু প্রতিষ্ঠান হল-
- ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি।
- কম্পিউটার ইন্ডাস্ট্রি।
- টেলিকমিউনিকেশন সেক্টর।
- ই-কমার্স সেক্টর।
- প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া।
- পাওয়ার প্লান্ট, পিডিবি, পল্লীবিদ্যুৎ, ডেসকো, ওয়াসাসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান।
- সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও বীমা কোম্পানিগুলোতে মেনটেইন্যান্স ও আইটি অফিসার হিসেবে।
- বায়োটেকনোলজি সেক্টর।
- ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস সেক্টর।
- সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক সমূহ।
- সৌর বিদ্যুৎ ও পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র।
- শিল্প-কারখানা, গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি।
ক্যারিয়ার হিসাবে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-
বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব জায়গাতেই কম্পিউটার নির্ভর ব্যবস্থাপনা। ফলে প্রতিটি দফতর, শিল্পে আইটি এক্সপার্ট এবং কম্পিউটার প্রকৌশলী অত্যাবশ্যক হয়ে দাড়িয়েছে। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা হোল্ডারা এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারে। এছাড়াও আত্ম কর্মসংস্থানের জন্য কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং খুবই সম্ভাবনাময় সেক্টর। একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমাধারী স্বাধীন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারেন অথবা নিজের হার্ডওয়্যার বিক্রয় ও সার্ভিসিং এর প্রতিষ্ঠান খুলতে পারেন।
- কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ-
- কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং- এ ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সে সকল সেক্টরে উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ আছে সেগুলো হল-
- বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং
- বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স
- বিএসসি ইন ইনফরমেশন অ্যান্ড কম্পিউটার টেকনোলজি
- বিএসসি ইন ইনফরমেশন সায়েন্স
- বিএসসি ইন ডাটা ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি
- বিএসসি ইন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং
- বিএসসি ইন গ্রাফিক্স অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া টেকনোলজি
এছাড়াও দেশের বাইরে এ সকল বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভ করা সম্ভব।
ভর্তির যোগ্যতা:
ভর্তির জন্য এস.এস.সি / সমমান পরীক্ষার পাশকৃত সাধারণ গণিত বা উচ্চতর গণিতে কমপক্ষে জি.পি.এ ৩.০০ সহ ন্যুনতম ৩.০০ জি.পি.এ প্রাপ্ত ছাত্রীরা আবেদন করতে পারবে। এস.এস.সি সহ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কতৃক অনুমোদিক ০২ (দুই) বছর মেয়াদী ট্রেড কোর্স পাস প্রার্থীরাও আবেদন করতে পারবে। জি.পি.এ পদ্বতি চালুর পূর্বে এস.এস.সি / সমমান পরীক্ষায় ন্যুনতম ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ যে কোন বয়সের শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবে।
নির্ধারিত আবেদন ফরম অনলাইনে পূরণ এবং বিস্তারিত ভর্তির তথ্য www.techedu.gov.bd অথবা www.bteb.gov.bd ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।